রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৩৯ পূর্বাহ্ন
কুয়াকাটা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি, কালের খবর : চরম ভাবমূর্তি সংকটে পড়েছে মহিপুর থানা পুলিশ। মহিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ পরিদর্শক মো. মনিরুজ্জামানের বিরুদ্ধে ঘুষ লেনদেন এবং পুলিশিংয়ের পরিবর্তে হয়রানিসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে তদন্ত চলছে। ফলে থানার অভ্যন্তরে এক ধরনের অস্বস্তিকর অবস্থা বিরাজমান থাকার পাশাপাশি, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে অফিসারদের রীতিমতো হিমশিম খেতে হয়।
এসব দাবি মহিপুর থানার একাধিক পুলিশের উপ পরিদর্শকের। তাদের ভাষ্যমতে, থানার আলীপুরে গত ৮ আগস্ট এক ইয়াবা ব্যবসায়ীকে আটক করতে গিয়ে রোষানলে পড়ে পুলিশ। আগে থেকে ওসির বিরুদ্ধে অভিযোগ করে আসা ওইসব লোকজনের চাপের মুখে পুলিশের সোর্সকেও ওই ইয়াবা আটকের ঘটনায় উল্টো আসামি করতে হয়েছে বলে দাবি সংশ্লিষ্ট এসআইয়ের।
এছাড়া গত ১৭ আগস্ট কুয়াকাটায় জুয়ার আসরে পুলিশ অভিযান চালাতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছে। এ ঘটনায় দুই এসআই এবং দুই কনস্টেবল আহত হয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে মহিপুর থানার একাধিক উপপরিদর্শক কালের খবরকে জানান, সোর্স মারফত অনেক অপরাধ সংঘটিত হওয়ার খবর পেলেও এড়িয়ে যাবার চেষ্টা করছি। বর্তমান ওসির অধীনে মাঠে অপরাধ দমনে কাজ করতে গিয়ে নানা ঝামেলার মুখোমুখি হতে হচ্ছে।
এদিকে থানার লতাচাপলী ইউনিয়নের তাহেরপুর গ্রামের মজিবর জানান, তাকে প্রকাশ্যে জীবননাশের হুমকি দেয়া হলে মহিপুর থানার ওসির কাছে গিয়েছেন। একটি সাধারণ ডায়েরি করার প্রার্থনা করলেও তিনি তা গ্রহণ না করায় বর্তমানে তিনি এলাকা ছেড়েছেন।
এমন অভিযোগ মহিপুর থানায় সাধারণ ডায়েরি করতে গিয়ে ফিরে আসা অসংখ্য শঙ্কিত মানুষের। পুলিশের ভাবমূর্তি সংকটে পড়ায় অপরাধী চক্র আবার সক্রিয় হয়ে উঠেছে বলে মহিপুর থানার সচেতন মহলেরও অভিমত। তাদের মতে, মহিপুর মৎস্য আড়তপট্টির দুই জায়গায়, মহিপুর ওয়াপদা কলোনি এলাকায়, আলীপুর ইউনিয়ন পরিষদের কাছে একটি বাসায় এবং কুয়াকাটার একাধিক কথিত আবাসিক হোটেলে পতিতাবৃত্তি ও জুয়ার আসর চললেও পুলিশের ভূমিকায় উদাসীনতা স্পষ্ট। সক্রিয় হয়ে উঠেছে মাদক কারবারীরা।
কিন্তু গত এক মাসেও মহিপুর থানায় মাদকের বড় কোনো চালান আটকের নজির নেই। মহিপুর থানার চেইন অব কমান্ড কাগজে-কলমে ঠিক থাকলেও এসআইদের মুখেই এখন ওসি মনিরুজ্জামানের সমালোচনা শোনা যায়।
সব মিলিয়ে এক ধরনের শৈথিল্য ভাব দেখা গেছে এসআই এবং এএসআইদের মধ্যে।
ওসির বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগের তদন্তের দায়িত্বে থাকা কলাপাড়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আলী আহম্মদ থানায় জিডি না নেয়ার কোনো কারণ নেই উল্লেখ করে কালের খবরকে বলেন, মহিপুর থানার উপপরিদর্শকদের মধ্যে যদি কেউ পুলিশের ভাবমূর্তি সংকটের কথা বলে থাকে, এটি তার নিজস্ব বক্তব্য। তবে এসব বিষয় আমরা খতিয়ে দেখার চেষ্টা করব।